পার্বত্যচট্টগ্রামের প্রথাগত প্রশাসনিক/ হেডম্যান ব্যবস্থা অনেক পুরানো। ভারতীয়উপমহাদেশে উপনিবেশকালের পূর্ব থেকে প্রথাগত প্রশাসনিক ব্যবস্থা এই অঞ্চলেচালু ছিল। বৃটিশ আমলে ১৮৬০ সালে ভারতীয় জেলা আইন বলে প্রথম পার্বত্যচট্টগ্রামকে জেলা হিসাবে ঘোষনা করা হয়। এর পর পরই ব্রিটিশ সরকার বিভিন্নসময়ে অনেক প্রশাসনিক আইন সংস্কার করে। ১৮৭৩ সালে ব্রিটিশ সরকার পার্বত্যচট্টগ্রামকে তিনটি সার্কেলে বিভক্ত করাসহ প্রশাসনিক সংস্কার,রাজনৈতিক ওশাসনতান্ত্রিক সংক্রান্ত বেশ কিছু নীতিমালা গ্রহন করে। এর পর ব্রিটিশ সরকারপার্বত্য চট্টগ্রামকে শাসন করার জন্য Rules for the Administration of Chittagong Hill Tracts 1892 নামে একটি আইন প্রনয়ন করে যা পরবর্তীসময়ে ১৯০০ সালে The Chittagong Hill Tracts Regulation, 1900-নামেএকটি প্রবিধান রচনা করে। ব্রিটিশ সরকারের উক্ত দুটি আইনের মাধ্যমেপাকাপোক্ত ভাবে ঐতিহ্যবাহী শাসন প্রথা আইনগত ভাবে স্বীকৃত।
তিহ্যবাহী শাসনতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান হিসাবে হেডম্যান বিভিন্ন জনগুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে। ১৯০০ সালের পার্বত্য শাসনবিধিঅনুসারে মৌজা হেডম্যানদের দায়িত্ব ও কর্তব্য সুনির্দিষ্ট।
1) নিজ মৌজার অন্তর্ভূক্ত প্রজাদের নিকট হতে ভূমি রাজস্ব আদায় করা। আদায়কৃতরাজস্ব হতে নির্ধারিত হারে একটি অংশ সরকারী কোষাগাওে জমা প্রদান। প্রজাদেরভূমি সংক্রান্ত বিরোধ নিস্পত্তি এবং সরকারী জরিপ কাজে সহযোগিতা।
2) ভূমি সংক্রান্ত নথি সংরক্ষন করা। খাস জমি বন্দোবস্তি ও জমি হস্তান্তরেরব্যাপারে সহযোগিতা ও মতামত প্রদান করা। এবং প্রজাদের অ-স্থাযী জুমচাষেরজন্য ভূমি বন্টন করা।
3) মৌজার শান্তি ও সামাজিক শৃংখলা বজায় রাখা। উপজাতীয় আদিবাসী রিতি অনুসারেছোট ছোট দেওয়ানী ও ফৌজদারী মামলা নিষ্পত্তি করা। উক্ত আইন অনুসারেহেডম্যানরা তৃতীয় শ্রেনীর ম্যাজিস্ট্রেটের সমমান ক্ষমতাপ্রাপ্ত এবং তাঁরাদোষী ব্যক্তিকে সর্বোচ্চ রূপার মূদায় ২৫(পছিশ) টাকা পর্যন্ত জরিমানা করতেপারেন। অন্যদিকে রাজারা রূপার মূদ্রায় ৫০(পঞ্চাশ) টাকা পর্যন্ত জরিমানাকরতে পারেন। এবং সন্দেহভাজন যে কোন ব্যক্তি কে আইন শৃংখলা বাহিনীর নিকটহস্তান্তর পূর্ব পর্যন্ত আতক বা আতক করে রাখার আদেশ দিতে পারেন।
4) মৌজার শান্তি শৃংখলা রক্ষা করা, মৌজার জনগনের চরিত্র গঠনে সহায়তাকরা,এলাকার বনজ সম্পদ রক্ষা করা, চুরি ডাকতি দমনে প্রশাসন ও পুলিশকেসহায়তা করা।
5) তৃণমূল পর্যায়ের প্রতিনিধি হিসাবে মফস্বলে কর্তব্য কাজে নিয়োজিতসরকারীদের সহায়তা প্রদান করা। সরকারী আদেশ, নির্দেশ ও নীতিমালা মৌজারজনসাধারনের কাছে পৌছে দেওয়া।
6) বনজ সম্পদ তথা জীববৈচিত্র সংরক্ষনের জন্য নিজ মৌজার সুবিধাজনক স্থানে মৌজা রিজার্ব গড়ে তোলা।
7) মৌজার বনজ সম্পদ রক্ষায় জুমের আগুনে অথবা বিনা কারনে আগুন লাগিয়ে যাতে নষ্ট না হয় সে ব্যাপারে জনগণকে সচেতন করা।
1) উত্তরাধিকার সনদ প্রদান,
2) স্থায়ী বাসিন্দ সনদ প্রদান,
3) মৃত্যু সনদ প্রদান,
4) রাজস্ব আদায় ও সরকারী কোষাগারে জমা প্রদান,
5) মৌজার ভূমি ব্যবস্থাপনা,
6) মৌজায় সামাজিক বন সংরক্ষণ,
7) সামাজিক বিচার ও রীতিনীতি সংরক্ষণ,
8) আইন শৃংখলা রক্ষা করা,
9) সরকারী জাতীয় কর্মসূচী বাস্তবায়ন করা।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস